Story of Tulsi & Saligram Stone তুলসী এবং শালিগ্রাম শিলা || শালিগ্রাম শিলা আসলে কি
কুশধ্বজ নামে এক রাজার কন্যা ছিলেন বেদবতী। বেদবতী রাবণ দ্বারা অপমানিত হয়ে নিজের আত্মত্যাগ করেন এবং মৃত্যুর আগে রাবণকে অভিশাপ দিয়ে যান, পরজন্মে বেদবতীই রাবণের বিনাশের কারণ হবেন। পরজন্মে বেদবতী সীতা রূপে জন্ম নেন।
কুশধ্বজের ভাই ধর্মধ্বজের কন্যা ছিলেন তুলসী। তুলসী ছিলেন অসুররাজ শঙ্খচূড়ের স্ত্রী। শঙ্খচূড় পূর্বজন্মে শ্রীকৃষ্ণ সখা সুদামা ছিলেন। রাধার অভিশাপে তিনি অসুররূপে জন্মলাভ করেছেন। শঙ্খচূড় মহাদেবের তপস্যা করে এক কবজ লাভ করেছিলেন, যা তার দেহে যতক্ষন থাকবে, ততক্ষণ শঙ্খচূড় দেবতাগণের দ্বারা অজেয় থাকবেন। এছাড়া শঙ্খচূড়ের স্ত্রী তুলসী যতক্ষণ পবিত্রতা বজায় রাখবেন, তার স্বামী ততক্ষন সমস্ত বিপদমুক্ত থাকবেন। অজেয় শঙ্খচূড় দ্বারা বিতাড়িত হয়ে দেবতাগণ মহাদেব ও বিষ্ণুর সাহায্য প্রার্থনা করলেন। বিষ্ণু-প্রদত্ত শূল দ্বারা শিব শঙ্খচূড়ের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। সেই সময় বিষ্ণু শঙ্খচূড়ের রূপ ধারণ করে তুলসীর কাছে গেলেন এবং তার পবিত্রতা নষ্ট হয়। এরপর ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ নিয়ে শঙ্খচূড়ের সন্মুখে উপস্থিত হলেন বিষ্ণু। তার কাছে ভিক্ষাস্বরূপ সেই কবজ চাইলেন। ব্রাহ্মণের কথামত শঙ্খচূড় সেই কবজ ব্রাহ্মণকে দান করলেন। এর ফলে শঙ্খচূড়ের বিনাশ সুনিশ্চিত হল। এমন সময় মহাদেব শঙ্খচূড়কে হত্যা করেন। অভিশাপ থেকে মুক্তি পেলেন সুদামা।
ওদিকে বিষ্ণুর দ্বারা প্রতারিত হয়ে তুলসী বিষ্ণুকে অভিশাপ দেন, যে পাষান হৃদয়ে বিষ্ণু এমন নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, সেই বিষ্ণু পাষাণে পরিনত হবে। ভগবান বিষ্ণু এই অভিশাপ সাদরে গ্রহণ করে তুলসীকে আশীর্বাদ দিলেন, তুলসীর দেহ পবিত্র গন্ডকী নদীতে পরিনত হবে এবং তার মস্তকের কেশরাশি তুলসীবৃক্ষে পরিনত হবে।
পবিত্র গন্ডকী নদীতে শিলারূপে অবস্থান করবেন স্বয়ং বিষ্ণু। কোটি কোটি কীট দাঁত দিয়ে সেই পাষান কেটে চক্র গঠন করবে। শালগ্রামশিলা রূপে বিষ্ণু গন্ডকী নদীতে অবস্থান করছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেখানে আজ হিমালয় রয়েছে, সেখানে আজ থেকে কয়েক কোটি বছর আগে ছিল এক সমুদ্র। সেই সমুদ্রে ১০-১৫ কোটি বছর আগে অ্যামোনাইট নামক শামুক জাতীয় প্রাণী বাস করত। এখন সম্পূর্ণ বিলপ্ত সেই প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া যায় গন্ডকী নদী উপত্যকায়। এই জীবাশ্মই শালগ্রামশিলা নামে পূজিত হয়।
কাহিনীটি বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি অবশ্যই দেখে নিন
(পৌরাণিক কাহিনীর তথ্যসূত্রঃ ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, শিবমহাপুরাণ, রামায়ণ)
Comments
Post a Comment