একই দেহে মাতা-পিতা ( Mother & Father both are one person)
সন্তানের পিতা এবং মাতা দুজনেই এক ব্যক্তি- এমন অদ্ভুত কাহিনী রয়েছে আমাদের পুরাণে৷ এমন দুটি কাহিনীর কথা বলব। প্রথম কাহিনীটি এরকমঃ
রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ ইক্ষাকু বংশীয় এক রাজা ছিলেন যুবনাশ্ব। দীর্ঘদিন সন্তানহীন থাকায় রাজপুরোহিতগণ রাজার স্ত্রীর জন্য এক যজ্ঞের দ্বারা দৈব ঔষধি লাভ করেন। সেই ঔষধি পানের ফলে রানী গর্ভধারণ করবেন। এমন সময় ঘটে যায় এক দূর্ঘটনা। তৃষ্ণার্ত রাজা জলের সন্ধানে যজ্ঞস্থলে এসে এক কলসী দেখলেন। তখনো তিনি জানেন না রাজপুরোহিতগণের সাফল্যের কথা।
জল ভেবে সেই ঔষধি তিনি পান করলেন। এর ফলে রাজা যুবনাশ্ব গর্ভবান হয়ে পড়েন। গর্ভাবস্থা সম্পূর্ণ হলে রাজার পেট কেটে গর্ভস্থ সন্তানের জন্ম দেওয়া হয়েছিল। কে বলতে পারে, সেই শিশুই হয়তো বিশ্বের প্রথম সিজারিয়ান পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া শিশু। যুবনাশ্বের সেই পুত্রসন্তানের নাম মান্ধাতা (এনার নামেই "মান্ধাতার আমল" কথাটি এসেছে)।
এবার বলি দ্বিতীয় কাহিনী।
ব্রহ্মার অশ্রুবিন্দু থেকে এক বানরের জন্ম হয়েছিল। তার নাম ঋক্ষরজা। একদিন সুমেরু পর্বতে এক স্বচ্ছ সরোবরে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে সে ভাবল কোনো প্রতিপক্ষ বানর। এই ভেবে সে জলে ঝাপিয়ে পড়ল। সরোবরের জলের অলৌকিক ক্ষমতার বলে সেই বানর এক সুন্দরী নারীতে পরিনত হল। এমন সময় দেবরাজ ইন্দ্র ও সূর্যদেবের ঔরসে সেই পরমাসুন্দরী নারী দুই সন্তানের জন্ম দিল।
পরের দিন সে নারী থেকে আবার বানর রূপ ফিরে পেল। ব্রহ্মার আদেশে ঋক্ষরজা নামের সেই বানর দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে কিষ্কিন্ধ্যায় গেল। ব্রহ্মার আজ্ঞায় ঋক্ষরজা কিষ্কিন্ধ্যা তথা সমগ্র বিশ্বের বানরকুলের অধিপতি হলেন। দেবরাজ ইন্দ্র ও সূর্যদেবের ঔরসে জন্ম নেওয়া দুই পুত্র ছিলেন বালী ও সুগ্রীব আর ঋক্ষরজা ছিলেন বালী-সুগ্রীবের মাতা-পিতা।
Comments
Post a Comment