বাংলা ভাষার তথা সমগ্র বাংলার আদি নারী কবি বলতে খনা, রামী, মাধবী এবং চতুর্থজন হলেন চন্দ্রাবতী। পদ্মপুরাণ, মনসামঙ্গল রচয়িতা বিখ্যাত কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা চন্দ্রাবতী (১৫৫০-১৬০০)। বাল্যসখা জয়ানন্দের সাথে বিবাহের দিন জয়ানন্দ আসমানী নামে অপর এক মহিলাকে বিবাহ করেন। অপমানে-দুঃখে সারা জীবন অবিবাহিত থেকে গেলেন চন্দ্রাবতী। তার সেই দুঃখের কাহিনী যেন তুলে ধরলেন তার লেখা রামায়ণে, যা "চন্দ্রাবতী রামায়ণ" নামে খ্যাত। চন্দ্রাবতী রামায়ণের কাহিনীটি অসমাপ্ত। যেটুকু কাহিনী তিনি লিখে গিয়েছেন তাতে মূলত তিনটি বিষয় উল্লেখযোগ্য। ১. সীতার জন্মঃ সীতা রাবণ ও মন্দোদরীর কন্যা। মালয়, কাশ্মীরে প্রচলিত রামায়ণে রাবণকে সীতার পিতা দেখানো হয়েছে। এই কন্যা ভবিষ্যতে হানিকর হবে এই ভবিষ্যতবাণী পেয়ে রাবণ তাকে জলে ভাসিয়ে দেয়৷ মাধব ও সতা নামে এক জেলে দম্পতি তাকে পান এবং জনক রাজরাণীর কাছে রেখে আসেন। সতার নাম থেকেই তার নাম হয় সীতা। ২. সীতার বারমাসীঃ কৈকেয়ীর কারণে রাম বনবাসে যান, সীতা, লক্ষ্মণ তার সাথে বনে যান। চন্দ্রাবতী রামায়ণে ১৪ বছর নয়, ১২ মাস তাদের বনবাসে কাটাতে হয়েছিল। সীতা সেই ১২ মাসের কাহিনী শো...
ভারতের পুরাণকাহিনির মতই গ্রীস দেশের মাইথোলজিতে রয়েছেন অনেক বীর দেবতা এবং দেবী। গ্রীক মিথলজির দেবদেবীদের কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। আজ আপনাদের বলব গ্রীক দেবতাদের আদিমতম (primordial) অর্থাৎ প্রথম প্রজন্মের কথা। প্রথম প্রজন্মের দেবতা এবং আমাদের প্রাচীন বৈদিক দেবতাদের মধ্যে একটা বিশেষ মিল রয়েছে। আমাদের প্রাচীন যুগ অর্থাৎ বৈদিক সময়ে যেমন প্রকৃতি বিষয়ক দেবতা ছিলেন [যেমন ইন্দ্র (বজ্র/আকাশ), বায়ু, অগ্নি, বরুণ (জল)], তেমনি গ্রীক পুরাণের আদিম দেবতারাও ছিলেন প্রকৃতি সম্বন্ধীয়। সকল গ্রীক দেবদেবীর মধ্যে প্রথম সৃষ্টি হয়েছিলেন 'ক্যাওস' (Khaos/chaos)। ইনি ছিলেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শূন্যতা বা বায়ুমন্ডল। এর পর সৃষ্টি হলেন দেবমাতা গাইয়া (Gaia) বা পৃথিবী। কেউ বলেন ইনি ক্যাওস থেকে জন্মেছিলেন। আবার কেউ বলেন ইনি স্বয়ম্ভূ অর্থাৎ নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন ঠিক যেমন আমাদের ব্রহ্মা। এই দেবী ছিলেন গ্রীক মিথলজির বিখ্যাত দেবতাদের জননী। ধরিত্রী মায়ের সন্তানদের নিয়ে পরে বলছি। এর পর জন্ম নিলেন টারটারাস Tartarus। টারটারাস হলেন পৃথিবীর গহ্বরে জ্বলতে থাকা নরক। এখানেই অপরাধীদের বন্দী রেখে নরকযন্ত্রণা ভোগ ক...
#দেবী_কৌশিকী_কে? মার্কন্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম অংশে (যা শ্রী শ্রী চন্ডী নামে পরিচিত) দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়ার মা কৌশিকী অবতারে শুম্ভনিশুম্ভ বধের কাহিনী উল্লেখ আছে। কৌশিকী অর্থাৎ কোষ থেকে জন্ম যার। কিভাবে এই রূপের সৃষ্টি হল, জেনে নেওয়া যাক অতি সংক্ষেপে। সকল শক্তির আধার, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর যার অধীন, লক্ষ লক্ষ আদি অন্তহীন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড যার নিয়ন্ত্রণাধীন, সেই সর্ব শক্তিমান দেবী মহামায়া তিন রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। মহালক্ষ্মী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন, মহাকালী রূপে মধুকৈটভকে বধ করেন এবং মহাসরস্বতী রূপে শুম্ভনিশুম্ভকে বধ করেন। মহাসরস্বতী রূপটির নাম কৌশিকী। শুম্ভনিশুম্ভ নামে দুই অসুর ব্রহ্মার থেকে বর পেয়েছিলেন, কোনো পুরুষ তাদের বধ করতে পারবে না। মা পার্বতীর দেহ থেকে জন্ম যে নারীর রূপ তাদের মুগ্ধ করবে, সেই নারীই পারবে তাদের বধ করতে। এই বর পেয়ে অসীম শক্তিশালী দুই অসুর ত্রিভুবনে ভীষ্ম অত্যাচার শুরু করল। ঘটনাক্রমে একদিন মা পার্বতী ও বাবা মহেশ্বর কৈলাসে বসে কথোপকথনে ব্যস্ত। কথার ফাঁকে মহাদেব মায়ের দেহের কৃষ্ণ বর্ণ নিয়ে ঠাট্টা করে ফেললেন। স্বামীর মুখে...
Comments
Post a Comment