কৌশিকী অমাবস্যায় জানুন দেবী কৌশিকী আসলে কে? kaushiki amavashya | Goddess Kaushiki

 #দেবী_কৌশিকী_কে? মার্কন্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম অংশে (যা শ্রী শ্রী চন্ডী নামে পরিচিত) দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়ার মা কৌশিকী অবতারে শুম্ভনিশুম্ভ বধের কাহিনী উল্লেখ আছে। কৌশিকী অর্থাৎ কোষ থেকে জন্ম যার। কিভাবে এই রূপের সৃষ্টি হল, জেনে নেওয়া যাক অতি সংক্ষেপে।  

সকল শক্তির আধার, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর যার অধীন, লক্ষ লক্ষ আদি অন্তহীন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড যার নিয়ন্ত্রণাধীন, সেই সর্ব শক্তিমান দেবী মহামায়া   তিন রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। মহালক্ষ্মী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন, মহাকালী রূপে মধুকৈটভকে বধ করেন এবং মহাসরস্বতী রূপে শুম্ভনিশুম্ভকে বধ করেন। মহাসরস্বতী রূপটির নাম কৌশিকী।

শুম্ভনিশুম্ভ নামে দুই অসুর ব্রহ্মার থেকে বর পেয়েছিলেন, কোনো পুরুষ তাদের বধ করতে পারবে না। মা পার্বতীর দেহ থেকে জন্ম যে নারীর রূপ তাদের মুগ্ধ করবে, সেই নারীই পারবে তাদের বধ করতে। এই বর পেয়ে অসীম শক্তিশালী দুই অসুর ত্রিভুবনে ভীষ্ম অত্যাচার শুরু করল। 

ঘটনাক্রমে একদিন মা পার্বতী ও বাবা মহেশ্বর কৈলাসে বসে কথোপকথনে ব্যস্ত। কথার ফাঁকে মহাদেব মায়ের দেহের কৃষ্ণ বর্ণ নিয়ে ঠাট্টা করে ফেললেন।

স্বামীর মুখে এমন কথা দেবীকে মর্মাহত করল। দেবী স্থির করলেন, যে বর্ণ স্বামীর ঠাট্টার বিষয়, সেই রূপ তিনি ত্যাগ করবেন। তাই তিনি এক কঠোর তপস্যা শুরু করলেন। তপস্যা শেষে ব্রহ্মার আশীর্বাদে মা পার্বতী দেহত্বকের কৃষ্ণ কোষিকা ত্যাগ করে শ্বেতশুভ্র চন্দ্রের মত উজ্জ্বল রূপ পেলেন এবং স্বামীর কাছে ফিরে গেলেন।

দেবীবর্জিত শ্যামবর্ণ কোষ থেকে জন্ম নিলেন এক দেবী। তিনি কৌষিকী। মাতার অঙ্গ থেকে জন্ম বলে তার অপর নাম মাতঙ্গী। 

তিনি কৃষ্ণবর্ণা, অষ্টভূজা, নানা অস্ত্রে শোভিতা। বাহন সিংহ। শুম্ভনিশুম্ভের দুই সেনাপতি চন্ড-মুন্ড দেবীকে দেখে দুই অসুররাজকে খবর দিলেন। তাদের মুখে দেবীর রূপের বিবরণ শুনে দুজনেই আহ্লাদিত হলেন।তারা দূত সুগ্রীব মারফত বিবাহের প্রস্তাব পাঠালেন দেবীর কাছে। দেবী বললেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে যে তার সাথে যুদ্ধে জয়লাভ করবে, তাকেই তিনি বিবাহ করবেন। দেবীর বার্তা দূত সুগ্রীব জানাল অসুররাজাদের। দেবীর এই অহংকার জেনে শুম্ভনিশুম্ভ  সেনাপতি ধূমাক্ষ-কে পাঠালেন দেবীকে বন্দী করে আনতে। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে দেবীর "হূং" গর্জনের ভষ্ম হয়ে গেল অসুর সেনাপতি। এর পর একে একে চন্ড-মুন্ড-রক্তবীজ দেবীর হাতে পরাস্ত ও নিহত হলেন। চন্ড-কে বধ করে দেবী নাম পেলেন চন্ডী। এর পর মা চন্ডী শুম্ভনিশুম্ভ নামে সেই দুই অসুরকে এক ভয়ংকর যুদ্ধে হত্যা করেন এবং ত্রিলোকে আবার শান্তি ফিরে আসে। 

কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষ দিনে মা আবির্ভূতা হয়ে দুই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেছিলেন। 


তথ্যসূত্রঃ মার্কন্ডেয় পুরাণ, শিবমহাপুরাণ। 

চিত্র: মা সিদ্ধেশ্বরী, ঠনঠনিয়া কালীমন্দির।  

#kaushiki #chandimaa #GoddessDurga #goddesskali,

Comments

Popular Stories on this blog

Ramayan Written by Lady Poet : Chandravati Ramayan চন্দ্রাবতী এবং প্রথম মহিলা কবির লেখা বাংলা রামায়ণ "চন্দ্রাবতী রামায়ণ"

গ্রীক মিথলজি গল্প: পার্সিফোনি এবং হেডেস

ভারতীয় পুরাণে রয়েছে মানব বিবর্তনের কাহিনী